নিরাময়ের আড়ালে মাদকের রমরমা ব্যবসা (পর্ব-১)

প্রকাশঃ জুলাই ১, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৫১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:০৪ অপরাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

drugsরাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থার ধরণ রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। সেগুলোতে মাদকাসক্তদের সুস্থ করার নামে চলে নানা অপচিকিৎসা। নিবন্ধনহীন অনেক প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

পরিবারের লোকজন মাদকসেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে সম্মান ও সংঘাত এড়াতে মাদকাসক্ত আপন লোকটিকে টাকার বিনিময়ে নির্বিঘে মাদক গ্রহণের ব্যবস্থা করতেও দ্বারস্থ হচ্ছে তথাকথিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর। তাদের পরামর্শে ভর্তি করে দেয়া হচ্ছে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে। কিন্তু সরেজমিনে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ঘুরে এ ব্যাপারে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

সরকারি হিসাব মতে, সারাদেশে প্রায় ৪০০ মাদক নিরাময় কেন্দ্রের মধ্যে বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৮টি। বাকিগুলো অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। আর অবৈধ ওইসব নিরাময় কেন্দ্রের মালিকদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সেবার আড়ালে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাদক ব্যবসার দিকে।

তাদের এ ব্যবসার মধ্যে রয়েছে হেরোইন, গাঁজা, দেশি মদ, প্যাথিডিন, তরল ফেনসিডিল, ডিনেচার্ড স্পিরিট, লুপিজেসিক ইনজেকশন, রিকোডেক্স সিরাপ, ইয়াবা ট্যাবলেট, টিডি জেসিক ইনজেকশন। তবে মজার ব্যাপার হলো এসব মাদকদ্রব্য সহজেই বিক্রয় হচ্ছে তাদের নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া মাদক সেবকদের মাধ্যমেই।drugs23

পশ্চিম যাত্রাবাড়ী দয়াগঞ্জ মোড়ে মদিনা হাসপাতালের অন্তরালে সাইনবোর্ডবিহীন অবৈধভাবে অবাধে ব্যবসা চালাচ্ছে ‘হাদী’নামক মাদক হ্রাস কেন্দ্রটি। কৌশলে জানা যায়, এখানে মেঝেতে ঢালা বিছানায় ২০-৩০ জন ও কেবিনের মাধ্যমে নিয়মনীতি না মেনে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে হাদীর কর্মকর্তা লিটন অনুমোদনের ব্যাপারে কোনো উওর দেননি। তার মতে, লাইসেন্সের দরকার নেই।

এদিকে আরেক মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র সিপাহীবাগের ‘প্রশান্তির ’ কো-অর্ডিনেটর ফারুক রহমান মিন্টু বলেন, সরকারকে নিয়মিত ট্যাক্স-ভ্যাট দিয়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। বাণিজ্য নয়, আমাদের মূল লক্ষ্য সেবাদান।

সম্প্রতি একটি নিরাময় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক অভিযোগ করেন, তিনি যে কেন্দ্রে ছিলেন, ওই কেন্দ্রে রোগীদের চিকিৎসার জন্য কিছু মাদক ব্যবহারের অনুমতি ছিলো। কর্তৃপক্ষ ওই মাদক বাইরের লোকজনের কাছে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া পরিবারের কাছ থেকে যে পরিমাণ টাকা আদায় করা হয়, তার কিছু অংশ রোগীর পেছনে ব্যয় করে বাকি টাকা তাদের পকেটস্থ করা হয়।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G